Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

পূজার স্মৃতি প্রকৃতির আকুতি


প্রকাশের সময় : ২ years ago
পূজার স্মৃতি প্রকৃতির আকুতি

পূজার সময় আমাদের বড় আকর্ষণ ছিল দেবসাহিত্য কুটির থেকে প্রকাশিত বিচিত্র ভোজে পূর্ণ ঢাউস আকারের ঝলমলে পূজা বার্ষিকীগুলো। অনেকগুলোর নাম এখনো মনে আছে—উদয়ন, নবপত্র, মায়ামুকুর, ঝলমল ইত্যাদি। প্রকাশনার ঠিকানাটাও ভুলিনি—৩৬ ঝামাপুকুর লেন, কলকাতা। ষাট-পঞ্চান্ন বছরের ব্যবধানে ভেতরের পাতাগুলোও মনের পর্দায় ভেসে উঠছে। প্রতুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসাধারণ মুখাবয়ব আর দৃশ্য-পরিস্ফুটন, কেবল কালি-কলমের রেখাঙ্কনে, কখনো সামান্য তুলির ছোঁয়া—কী যে জীবন্ত মনে হতো, যেন গল্পে-পড়া দৃশ্যটাই চোখের সামনে রয়েছে।

নারায়ণ দেবনাথের ছিল নিজ বৈশিষ্ট্য, শৈল চক্রবর্তী এবং আরও কেউ কেউ আঁকতেন পরে। রেবতী আঁকতেন শিবরামের গল্পের ছবি, প্রতি সংখ্যায় থাকত হর্ষবর্ধন-গোবর্ধনের একটি গল্প। খুদে পাঠকের ভোজে অংশ নিতেন কলকাতার সব নামীদামি লেখক। প্রত্যেকেরই ছিল একটি করে নিজস্ব ধরন। সুকুমার দে সরকার লিখতেন পশুপাখি নিয়ে, নিরুপমা দেবী রূপকথা, সরোজকুমার রায়চৌধুরী ভূতের গল্প, হেমেন্দ্রকুমার রায় ঐতিহাসিক গল্প। এ ছাড়া সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, আশাপূর্ণা দেবী নানা স্বাদের মজার গল্প লিখতেন। তবে বড় আকর্ষণ ছিল নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের টেনিদা-প্যালারামদের গল্প, প্রেমেন্দ্র মিত্রের গপ্পবাজ সরস মানুষ ঘনাদার গল্প আর বিধায়ক ভট্টাচার্যের অমরেশকে নিয়ে লেখা নাটিকা। মাঝে মাঝে থাকত আর্ট পেপারে রঙিন ছবি। মনে পড়ছে, পি সি সরকার প্রতি সংখ্যায় দু–একটা জাদুর কসরত শিখিয়ে দিতেন। আর থাকত বীরত্ব বা সাহসের গল্প। সুনির্মল বসু লিখতেন সুখপাঠ্য কবিতা, কালিদাস রায় ইতিহাসের ঘটনা নিয়ে নীতি-কবিতা, কখনো জসীমউদ্​দীন, বন্দে আলী মিয়ার কবিতা থাকত। আমরা তিন ভাই–বোন খাওয়ার পরে ছুটির দুপুরে কাড়াকাড়ি করে বইটা পড়তাম।