Mrbee

রায়পুরে গোপনে সরকারি বই বিক্রি চালক আটক » গ্রামীণ কন্ঠ
Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

রায়পুরে গোপনে সরকারি বই বিক্রি চালক আটক


প্রকাশের সময় : ২ years ago
রায়পুরে গোপনে সরকারি বই বিক্রি চালক আটক

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মীরগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামছুত্তাওহীদ গোপনে বিক্রি করেছেন ২৫ মণ সরকারি বই। এর আগে স্কুলের রড বিক্রিসহ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। কয়েকবার পরিচালনা কমিটি, শিক্ষকদের সাথেও তার দ্বন্দ্ব হওয়ায় বিক্ষোভ মিছিলও হয়েছে। নির্দেশ থাকলেও বই বিক্রির বিষয়ে ইউএনও এবং শিক্ষা কর্মকর্তাকে কোনো কিছুই জানাননি তিনি।

রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম সাইফুল হক বলেন, এসব বই সরকারি সম্পত্তি। অবন্ঠিত বই অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। প্রধান শিক্ষক সরকারি বই বিক্রি করে দিয়ে থাকলে অপরাধ করেছেন। অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। জানা গেছে, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাড়াও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবক ও গ্রামবাসী। স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র সজিবসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিযোগ, দুপুর দেড়টার সময় বিরতির সময় দেখতে পান স্কুলের অফিস সহকারি আবদুল হাদি ২০ বস্তা বই পিকআপ গাড়িতে তুলছেন। এ সময় তার কাছে বই কোথায় নিয়ে যাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান– হেড স্যার জানেন।

তিনি বইয়ের বস্তাগুলো তুলে দিচ্ছেন। বইগুলো হেড স্যার বিক্রি করে দিয়েছেন। তখন ৯৯৯ ফোন করলে রায়পুর থানা পুলিশ এসে বই আটক করে।। গত ২৮ বছর আগে ১৯৯৪ সালে প্রধান শিক্ষিক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে শামছুত্তাওহীদ স্কুলের বিদ্যমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ দেখিয়ে বছর বছর দ্বিগুণ বই উত্তোলন করে আসছেন। শিক্ষার্থীদের মাঝে অর্ধেক বই বিতরণ করে বাকি বই গোপনে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। স্কুলের একজন সিনিয়র শিক্ষক নাম প্রকাশ না করতে চেয়ে বলেন, প্রধান শিক্ষক ঐতিহ্যবাহী মীরগঞ্জ স্কুলের বিভিন্ন খাতের বিপুল টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

তাকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে। স্কুলের জিনিসপত্র যখন যা হাতের কাছে পায় সেটিই তিনি বিক্রি করে টাকা নিজের পকেটে নেন। শিক্ষক-কর্মচারীসহ এলাকাবাসী তার এসব দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে তিনি রাজনৈতিক প্রভাবের ভয় দেখিয়ে থাকেন। অভিযোগকারীর মতে, আনুমানিক ২৫ মণ বই বিক্রি করে প্রায় ২০ হাজার টাকা হাতিয়েছেন প্রধান শিক্ষিক। অবণ্ঠিত এসব বই গোপনে বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার একেএম সাইফুল হক বলেন, সরকারি নিয়মে বই বিক্রি করা নিষিদ্ধ। কোনো স্কুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের পর বই অবশিষ্ট থাকলে প্রধান শিক্ষক সংশ্লিষ্ট মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে বইয়ের সংখ্যা জানাতে হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা যথাযথ মাধ্যমে শিক্ষা অধিদপ্তরকে বিষয়টি জানাবেন।

অবণ্ঠিত বই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে। অধিদপ্তর বিক্রির অনুমতি দিলে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে প্রধান করে নিলাম কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটি উন্মুক্ত নিলামে প্রতিযোগিতামূলক দরে বই বিক্রি করতে পারবেন। সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। প্রধান শিক্ষক কোনোভাবেই নিজে বই বিক্রি করতে পারবেন না সেটি গোপনে হোক বা প্রকাশ্যে। প্রমাণ হলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্তের নির্দেশ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

গোপনে বই বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে মীরগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক শামছুত্তাওহীদ জানান, বই বিক্রির বিষয়ে তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। মৌখিক অনুমতি নিয়ে বই বিক্রি করেছেন তিনি। অন্য অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। একটি চক্র হয়রানি করছেন।