লক্ষ্মীপুর, ০৩ আগস্ট ২০২২: লক্ষ্মীপুর জেলার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্যাকটা প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্নীতি হ্রাস পায় এবং সেবাদানকারী ও সেবাগ্রহীতার মধ্যে একটি ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে- এটাই কামনা করছি। তিনি আরো বলেন, টিআইবি সরকারের প্রতিপক্ষ নয়, বরং উন্নয়ন সহযোগী এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উক্ত প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়নে যাবতীয় সহযোগিতা প্রদানে সবসময় প্রস্তুত রয়েছে। তিনি জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ০৩ জুলাই সকাল ১০:৩০ টায় সদর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), টিআইবি, লক্ষ্মীপুর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “প্যাকটা প্রকল্প অবহিতকরণ” সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরান হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর এর লক্ষ্মীপুর এর সিভিল সার্জন ডাঃ আহাম্মদ কবির বলেন।
সনাক-টিআইবি লক্ষ্মীপুর এর সভাপতি প্রফেসর জেড. এম ফারুকী’র স্বাগত বক্তব্য প্রদানের মাধমে শুরু হওয়া সভায় সনাক, টিআইবি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন “প্যাকটা” প্রকল্পের মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন টিআইবি’র চট্টগ্রাম ক্লাস্টার এর ক্লাস্টার কো-অর্ডিনেটর মোঃ জসিম উদ্দিন। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উপস্থাপিত তথ্যে তিনি বলেন পার্টিসিপেটরি অ্যাকশন এগেইনস্ট করাপশন: টুওয়ার্ডস ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি – প্যাকটা প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে ”টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনের জন্য দুর্নীতি হ্রাস এবং সেবা প্রদান কার্যক্রমে শুদ্ধাচার বৃদ্ধি”। এছাড়াও তিনি তার উপস্থাপনায় বলেন, জানুয়ারি ২০২২ – ডিসেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদি প্যাকটা প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে ১. আইনি, নীতিগত এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমে সুশাসনের সক্ষমতা ও চর্চার উন্নয়ন ঘটানো; ২. সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহে অংশগ্রহণমূলক এবং কার্যকর সুশাসন নিশ্চিত করা; ৩. অনিয়ম ও দুর্নীতি হ্রাস করে তৃণমূল পর্যায়ে সেবা প্রদান ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে খাতভিত্তিক গবেষণা ও প্রমাণ নির্ভর অ্যাডভোকেসি করা। উক্ত প্রকল্পের আওতায় সনাক-টিআইবি লক্ষ্মীপুর আগামি ৫ বছরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভূমি, পরিবেশ ও নির্মাণ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পেশাজীবিদের সমন্বয়ে এসিজি গঠনপূর্বক কমিউনিটি মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে লক্ষ্মীপুর এর সিভিল সার্জন ডাঃ আহাম্মদ কবির বলেন, বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ দুর্নীতি প্রশমনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে টিআইবি’র প্যাকটা প্রকল্পের মতো অ্যাপ নির্ভর প্রকল্প জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং সুশাসন নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি সনাক-টিআইবি লক্ষ্মীপুর এর সাথে আরো নিবিড়ভাবে যুক্ত হয়ে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, এনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ ও সাংবাদিক প্রতিনিধিবৃন্দ।
সমাপনী বক্তব্যে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরান হোসেন বলেন, আমাদের কালচারের মধ্যে দুর্নীতির প্রভাব রয়েছে এবং এগুলো থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তিনি আরো বলেন, টিআইবি সরকারের অনেক কাজে সহযোগিতা করছে যা প্রশংসনীয়। এ আয়োজনের জন্য তিনি টিআইবি তথা সনাক লক্ষ্মীপুরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উক্ত অবহিতকরণ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর এর বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ, এনজিও প্রতিনিধিবৃন্দ ও সাংবাদিক প্রতিনিধিবৃন্দ, সনাক-টিআইবি লক্ষ্মীপুর সদস্যবৃন্দ ও সনাক লক্ষ্মীপুর এর ইয়েস গ্রুপের সদস্যবৃন্দ।
আপনার মতামত লিখুন :