রায়পুর (লক্ষ্মীপুর):নাসির আল ইমরান। টকবগে তরুন ও একজন সামাজিক সংগঠক। গত ৬ বছর ধরে রোপণ করেছেন অন্তত ৫ হাজার বৃক্ষের চারা। বিতরণও করেছেন অন্তত ৮ হাজার চারা। লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উপজেলায় এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম মৎস প্রজনন ও প্রশিক্ষন কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো, গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, খেজুর, মেহগনিসহ যেসব গাছ চোখে পড়ে, তার বেশির ভাগই তার হাতে লাগানো।
নাসির আল ইমরান। পরিবেশ বন্ধু, রক্তের ডোনার, সামাজিক সংগঠক। পেশাগত ব্যস্ততার মাঝে সুযোগ পেলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে গাছের চারা বিতরণ করেন তিনি। যেখানেই খালি জায়গা পান, সেখানেই গাছের চারা রোপণ করেন। নদী, খাল, পুকুরের পাশে। এ জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে রায়পুর—লক্ষ্মীপুর—উপজেলায় ঘোরেন তিনি। সঙ্গে রাখেন চারা, কোদাল—খন্তা ও ৫—৬ সহযোদ্ধা।
এই সামাজিক সংগঠক এভাবে রোপণ করেছেন অন্তত ৯ হাজার গাছের চারা। বর্তমানে রায়পুর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, খেজুর, মেহগনিসহ যেসব গাছ চোখে পড়ে তার বেশির ভাগই তার হাতে লাগানো। এছাড়াও মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ময়লা—আবর্জনা পরিস্কার,পরিচ্ছন্ন রাখতে সবাইকে উদ্ধুদ্ধ করছেন।
পরিবেশ বান্ধব —সামাজিক সংগঠক নাসির আল ইমরান জানান, ২০১৮ সাল থেকেই প্রকৃতি ও পরিবেশ আজ সংকটের মুখোমুখি। এ সংকট বিশেষ কোনো গোষ্ঠী, দেশ বা জাতির নয়; সমগ্র মানবজাতির। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ফলে বিপন্ন পরিবেশ। মানুষের বসবাস উপযোগী বিশ্ব গড়ার লক্ষ্যে চাই দূষণমুক্ত পরিবেশ। তাই বিশ্বব্যাপী পরিবেশ দূষণ রোধ ও পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ—— সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পালনহয়‘পরিবেশ দিবস’।
তিনি সবুজ বাংলাদেশ রায়পুর উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিষ্ঠা সামাজিক সংগঠন পাওয়ার অব ইয়ুথ। যিনি সমাজের তরুণদের নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক কাজের পাশাপাশি পরিবেশ নিয়ে কাজ করছেন। জাতীয় বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে তরুণদের নিয়ে স্কুল, বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার পাশে গাছ লাগানোর কর্মসূচি অব্যাহত রাখছেন। ২০২০ সাল থেকে ঝউএঝ নিয়ে তার সংগঠন পাওয়ার অফ ইয়ুথ কাজ করছে। ২০২০ সালে জেলায় “সেরা স্বেচ্ছাসেবক” নির্বাচিত হয়। এছাড়া তরুণদের নিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করার ফলে একাধিক সংগঠন কতৃক বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে যে ভাবে গাছ কাঁটা থেকে শুরু করে বৃক্ষ নিধনের মিছিল চলছে। বৃক্ষ নিধন চলমান থাকলে মানবজীবন হুমকিতে পড়বে, বিপর্যয় ঘটবে, দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, পৃথিবী ধ্বংসের মুখোমুখি হবে। তাই গাছ লাগিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সবার কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
নাসির আল ইমরান শুধু রায়পুরে নয়, জেলার অনেক জায়গায় বৃক্ষের চারা নিয়ে ছুটে যান প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে।, যারা গাছ ভালোবাসেন তাদের কাছে। প্রকৃতির সবচেয়ে সুন্দর রূপ বৃক্ষ, যা থেকে সব সময় মানুষ উপকৃত। সবাই মিলে গাছ লাগালে প্রাকৃতিক বিপর্যয় কাটিয়েওঠা সম্ভব।
তার ব্যাপারে জানতে চাইলে সবুজ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শাহিন আলম বলেন, নাসির আল ইমরান বৃক্ষরোপণ আন্দোলন সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বসবাস উপযোগী সুন্দর দেশ গড়তে তার মতোসবরএগিয়েআসা প্রয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন :