লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জায়গা দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি) সদস্য ও সাবেক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মতিন। তোরাবগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে রামগতি—কমলনগর আ লিক মহাসড়ক সংলগ্ন প্রায় ৮০ শতাংশ সরকারি জমি দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন তিনি। গত কয়েক মাস থেকে আবার নতুন করে ৩টি সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করছেন তিনি। এ ছাড়াও পুকুর পূর্বপাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি অফিসও দীর্ঘদিন থেকে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। জানা যায়, প্রায় ১০—১২ বছর আগে উপজেলার তোরাবগঞ্জ এলাকায় লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি পুকুর মাছ চাষের জন্য লিজ নেন আবদুল মতিন। লিজ নিয়ে তিনি তখনকার অসাধু কিছু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে রামগতি—লক্ষ্মীপুর আ লিক মহাসড়কের পাশে পুকুর পাড়ে ১২টি সেমিপাকা দোকানঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে আসছেন। এরমধ্যে কর্মকর্তাদের ফাঁকি দিয়ে ভূমি অফিসের মাধ্যমে নিজের নামে রেকর্ড করিয়ে নেন ওই জমি। খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। এরপর তার লিজও বাতিল করা হয়। সমপ্রতি আবদুল মতিন আবার নতুন করে পুকুরের পশ্চিম ও দক্ষিণ অংশে ৩টি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করছেন।এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবদুল মতিন বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষদের সম্পত্তি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে রেকর্ড হয়েছে। আমরা আমাদের জমি পুনরুদ্ধারে চেষ্টা করছি। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার কয়েকজন প্রবীণ লোক জানান, তোরাবগঞ্জ এলাকার সবচেয়ে অসহায় ছিল এ পরিবার। এক সময় চালকল থেকে চাল কুড়িয়ে চলতো তাদের সংসার। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাতারাতি তার পরিবর্তন হয়ে যায়। পাউবো’র সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা কাজী শাহিন বিন কাশেম বলেন, এ আবদুল মতিন একজন প্রতারক। সে আমাদের থেকে পুকুর লিজ নিয়ে প্রতারণা করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি নিজের নামে রেকর্ড করে আশপাশে ভবন করে ফেলছে। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আশা করছি, খুব দ্রুত তার থেকে আমাদের জমি দখল ফিরিয়ে নিতে পারবো। লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকার আমাদের অনেকগুলো জায়গা অসাধু ব্যক্তিদের দখলে রয়েছে। কিছু অদৃশ্য কারণে উদ্ধার করতে পারছি না। আশা করছি, খুব শিগগিরই যেকোনো মূল্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আমাদের জায়গাগুলো উদ্ধার করা হবে। কমলনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফেরদৌস আরা বলেন, অবৈধ দখলদারদের তালিকা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমাদের দিতে বলা হয়েছে। তালিকা পেলে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের অনুমতি নিয়ে দখল উচ্ছেদ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :