Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

তাঁর এমনই ক্ষমতা, বাসা ভাড়া দেন না-করে চলেছেন নানা অনিয়ম


প্রকাশের সময় : ২ years ago
তাঁর এমনই ক্ষমতা, বাসা ভাড়া দেন না-করে চলেছেন নানা অনিয়ম

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :মোঃ লুৎফুর রহমান। তিনি পূর্ব-মধ্য এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম লক্ষ্মীপুরের রায়পুর মৎস প্রজনন ও প্রশিক্ষন কেন্দ্রের উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। কোয়াটারের বিশাল বাসায় পরিবার নিয়ে বাস করে। কিন্তু তিনি ভাড়া দেন না। পুর্বের এক কর্মকর্তার নামেই বরাদ্ধকৃত বাসায় থাকছেন। এক লুৎফুর রহমানের কারনে দেশের বৃহত্তম হ্যাচারি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।।
এছাড়াও সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) চালান। সেই সঙ্গে ফ্যান, লাইটসহ অন্য প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক যন্ত্র রয়েছে। ৫টি ভবনে বসবাসকারি আর কর্মকর্তাদের বিদ্যুৎ বিল তাঁরা নিজেরাই পরিশোধ করছেন।
হ্যাচারি সূত্রে জানা গেছে,বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা লুৎফুর রহমান ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানে যোগদানের আগে চট্রগ্রামের পটিয়ার খামারেও রেনু-পোনা বিক্রির প্রায় চার লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আতœসাৎ করেন । ২০২০ সালে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন যোগদানের পর থেকে রেষ্ট হাউজে বসবাস করছেন। কোয়াটারে খালি বাসা থাকা সত্ত্বেও বিনা ভাড়ায় রেষ্ট হাউজে থাকছেন। ২০১৫ সালে অবসর নেয়া গার্ড মোঃ মফিজ মজুমদারের কাছ থেকে মাসে ৫ হাজার টাকা করে আদায় করে অপর গার্ড মোঃ সুমনের বাসা ব্যবহারসহ সরকারি সকল কিছু ভোগ করার সুবিধা দিচ্ছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতাদের কাছে তিন দিনের রেনু বিক্রি ও ১২৫ গ্রাম রেনু বিক্রি হলেও সরকারি রশিদে লিখা হয় আড়াইশ গ্রাম। গত এক বছর ধরে ক্যাশিয়ার আবদুর রহিমকে গার্ডের কাজ করানো হচ্ছে। নকল ক্যাশিয়ার দিয়ে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। রেনু ওজনে কম দেয়ার প্রতিবাদ করায় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনের সাথে, গেষ্ট হাউজ বরাদ্ধ চাওয়ায় এসিল্যান্ড এবং স্যার সম্বোধন না করায় তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলিমুজ্জামানের সাথে চরম দুর্ব্যাবহার করে ওই কর্মকর্তা। এই কর্মকর্তার দুর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রাজিব চন্দ্র দাশ গত ২১ আগষ্ট বদলি হয়ে যান। তার মানুষিক অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মাষ্টার রোলে ২০ বছর চাকুরি করা কবির হোসেন ও হান্নান বাধ্য হয়ে প্রায় ৬ মাস আগে তারা চাকুরি ছেড়ে দেয়। রেনু পোনার জন্য আসা ক্রেতাদেরকে অপেক্ষামান কক্ষে রেখে রশিদ কেটে টাকা নিয়ে ভিতরে ঢোকানোর কথা থাকলেও সবাইকে রশিদ দেয়া হয়না। লুৎফুর রহমান তার অনুসারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন ও মাষ্টাররোলে কর্মরত কাশেমকে দিয়ে সব কাজ করনো হচ্ছে। এ কাশেম এসব অনিয়ম করে আজ অবৈধ সম্পদ গড়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, অক্সিজেনের অভাবে কেন্দ্রের পুকুরের রুই, কাতল, মৃগেল ও সিলভারের মা মাছ মারা যাচ্ছে। প্রতিটি মাছের ওজন পাঁচ থেকে আট কেজি। এই কর্মকর্তা রাতের আঁধারেপুকুরগুলোতে অতিরিক্ত চুন ফেলে পরিকল্পিতভাবে মা মাছগুলো মেরে বাইরে বিক্রি করে দিচ্ছেন। দরপত্র ছাড়াই ১০ লাখ টাকার গাছ বিক্রি ও সিসি ক্যামেরা-সহ বিভিন্ন মনিহারি ক্রয় করেন ওই কর্মকর্তা।।।
রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ লুৎফুর রহমান বলেন, ‘আমি এই হ্যাচারিসহ অন্য কোনো স্থানে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই ও ছিলাম না। রেণু বিক্রির রসিদে টাকার অঙ্কের গরমিলও নাই।
মৎস্য বিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক লিটন বলেন, ‘রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রের কর্মকর্তা- কর্মচারিদের অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ জানতে পেরেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
উল্লেখ্য, চাঁদপুর সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রকল্পের দুই হাজার ৪২৮ হেক্টর বদ্ধ জলাশয়, দুই হাজার হেক্টর জমির বোরোপিট ও প্রধান খালগুলোতে মাছ চাষের লক্ষ্যে মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র করার উদ্যোগ নেয় সরকার। রুই-জাতীয় মাছের রেণু ও পোনা সরবরাহ করে মাছের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ১৯৭৯ সালে এটি স্থাপন করা হয়। চার কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে করা রায়পুরের মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণকেন্দ্রে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯২ সালে। ২১ দশমিক ৮৩ হেক্টর আয়তনের এ কেন্দ্রে মোট পুকুর আছে ৭৫টি। এখানে ৮৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনুমোদিত পদ রয়েছে। কয়েকদিন আগে নতুন ৮জনসহ কর্মরত আছেন ২৬ জন।