সারোয়ার হোসেন, রামগতি (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা ৩১ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জনবল না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বি ত হচ্ছেন রোগীরা। অপারেশন থিয়েটার ও আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও দু একটি নরমাল ডেলিভারি ছাড়া অন্য কোন অপারেশন করা হয় না এ হাসপাতালে। নিরুপায় হয়ে রোগীরা পার্শ্ববর্তী কোনো ক্লিনিক বা প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে বাধ্য হন। এতে অতিরিক্ত টাকা খরচসহ নানা হয়রানির মধ্যে পড়তে হয় নদী ভাঙ্গন কবলিত এ অ লের লাখো মানুষকে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, এ হাসপাতালে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে ৪ জনের বিপরীতে ১ জন, ২১ জন মেডিকেল অফিসারের বিপরীতে ১১ জন, ২২ জন নার্সের বিপরীতে ১৩ জন নার্স রয়েছেন। এছাড়াও এমএলএসএস পদে ৫ জনের বিপরীতে ১ জন, ওয়ার্ড বয় ৩ জনের বিপরীতে ১ জন আছেন। ওটিবয় ২ জন থাকার কথা থাকলেও বর্তমান একজনও নেই। ২টি আয়া পদের বিপরীতে একজনও নেই। ২ জন সিকিউরিটি গার্ড থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ১জন, ৫ জন পরিছন্নকর্মীর বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ২জন। মালির পদটিও শূন্য রয়েছে।
এক দিকে যেমন জনবল সংকট অন্যদিকে হাসপাতালের স্যানিটেশন ব্যবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। বাথরুমগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। দুঃগর্ন্ধে রোগিদের ওয়ার্ডেও থাকা দায়। বহি: বিভাগে রোগীরা লাইনের পাশাপাশি ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড় জমাতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা নানা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে স্যালাইন পুশ করে দিলেও টাকা দিতে হয়। পরীক্ষার জন্য টাকা গ্রহন করা হলেও রশিদ দেয়া হয়না। ঠিকমত ঔষধ দেয়া হয়না। বাহির থেকে ঔষধ ক্রয় করতে হয় রোগীদের। এর আগে একাধিক গণমাধ্যমে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে সরবরাহকৃত রোগিদের খাবার সরবরাহে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ হলেও এতে অনিয়ম রয়েই গেছে। এখনো প্রায় সময়ে দুপুর ও রাতের খাবারে দেয়া হয় শুধুমাত্র ডিম ও ঝোল। সকাল বেলা নাস্তা হিসেবে দেয়া হয় পাউরুটি-কলা। দুপুরের খাবারে পাঙ্গাস দেবার অভিযোগও রয়েছে। সময়ানুযায়ী দেয়া হয়না দুপুরের খাবার। নিয়মিত আপডেট করা হয়না রোগি ভর্তি সংক্রান্ত তথ্যবোর্ডটিও।
ল্যাব কার্যক্রমের যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় বাহিরের লোকবল দ্বারা। কারামতিয়া চৌরাস্তা এলাকা থেকে জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগি বাদশা আলম জানান, গতকাল দুপুর এবং রাতে শুধুমাত্র ডিম দেয়া হয়েছে। এর আগের দিন দুপুর বেলায় দেয়া হয়েছে পাঙ্গাস মাছ।
অনেকেই অভিযোগ করে আরো বলেন, খুব সামান্য সমস্যায়ও রোগীদের রেফার্ড করা হয় অন্য হাসপাতালে। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডাঃ গোলাম ছারোয়ার জানান, নির্ধারিত জনবল না থাকায় এখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ আছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামনাশীষ মজুমদার জানান, জনবল সংকটের কারণে আমাদের চিকিৎসা সেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। নি¤œমানের খাবারের বিষয়ে তিনি বলেন, ১২০-১২৫ টাকা দিয়ে তিনবেলা খাবার কিভাবে দিবে! তবুও আগের চেয়ে সেবার মান অনেক বেড়েছে। অন্য সমস্যা গুলো তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
আপনার মতামত লিখুন :