Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

রায়পুরে বন্ধ হচ্ছে না পুকুর—জলাশয় ভরাট


প্রকাশের সময় : ২ years ago
রায়পুরে বন্ধ হচ্ছে না পুকুর—জলাশয় ভরাট

লক্ষ্মীপুর:লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পুকুর ও জলাশয় ভরাট বন্ধ হচ্ছে না। গত এক বছরে শতবর্ষীসহ প্রায় একশত পুকুর ও জলাশয় ভরাট হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে পুকুর ও জলাশয় ভরাটের কাজও চলমান রয়েছে। সেখানে গড়ে তোলা হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, বসতবাড়ি, মার্কেট ও বহুতল ভবন। যারা এসব কাজ করছেন, তাদেরও কারোর পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই বলে জানাযায়। এতে করে আইনকে চরম বৃদ্ধাঙ্গলি দেখানো হয়েছে বলে সচেতন মহল মনে করছেন।।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারী) উপজেলার সহকারি কমিশনা (ভূমি) কার্যালয় ও উত্তর চরবংশী ও চরআবাবিল ইউপির ভূমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা কতটি পুকুর ও জলাশয় ভরাট, এ সংক্রান্ত কোনো তথ্যই দিতে পারেননি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উত্তর চরবংশি ইউপির খাসের হাট বাজারে জয়নালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছনের খাশ পুকুর এবং ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনের দেড়শ বছরের সরকারি দিঘিটি গত ১০ বছর ধরে বাজারের বর্জ দ্বারা ভরাট করা হচ্ছে।।
অন্যদিকে—গত ২০দিন আগে রায়পুর— হায়দরগঞ্জ সড়কের মডেল কলেজের পাশে দুটি পুকুর ভরাট করে ফেলেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীগন।।
এছাড়াও মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদী ও তার সংযোগ খালে ড্রেজার যন্ত্রের সাহায্যে বালু তুলে পাইপের মাধ্যমে উত্তর চরবংশি, দক্ষিন চরবংশি, উত্তর চরআবাবিল, দক্ষিন চরআবাবিল, চরমোহনা, কেরোয়া, সোনাপুর ও বামনী ইউপির বিভিন্ন গ্রামে পুরানো পুকুর ও জলাশয় ভরাটের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে হায়দরগঞ্জবাজারের বাংলাবাজার এলাকা, মডেল কলেজ, ঝাউডুগি, ক্যাম্পেরহাট, উদমারা, চরকাছিয়া, চরবংশি গ্রামে পুকুর ভরাট করা হয়েছে। এতে করে ওই এলাকায় কোন আগুন লাগলে কোন পুকুর খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক বলেন, গত এক বছরের ডাকাতিয়া নদী ও মেঘনা নদী থেকে রায়পুরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় শতাধিক পুকুর ভরাটের কাজ শেষ করা হয়। আরো পুকুর, জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাটের কাজ চলছে।
পুকুর ভরাটের কাজে জড়িত কয়েকজন ব্যাক্তি বলেন, যাদের পুকুর, তারাই যদি পুকুর ভরাট করে ফেলেন, তাহলে আমাদের করার কি আছে—? শুধু পুকুর না, ড্রেজার মেশিন দিয়ে পুকুর থেকে বালু তুলে তা তাদের ফসলি জমিও ভরাট করছেন।
নোয়াখালীর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শুধু রায়পুরে না, জেলার কোথাও যে কোন পুকুর ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র নেওয়া হয়না। যে দল ক্ষমতায় থাকে তাদের নেতা—কর্মীরা জোড়পুর্বক সরকারি পুকুর বা নীজস্ব পুকুর ভরাট করছেন। এতে বাধা প্রধান করতে গেলেই নানান সমস্যার সৃষ্টি করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবেশ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক আদেশে বলা হয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, জনগণের আশ্রয়স্থল রক্ষা ও অগ্নিনির্বাপণে সহায়তা করতে কোনো অবস্থায় খাল—বিল, পুকুর—নালাসহ প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট করা যাবে না এবং এর গতিপথ পরিবর্তন করা যাবে না। তবে কোনো দপ্তর যদি সরকারি কাজে নিজস্ব পুকুর ভরাট করতে চায়, সে ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পুকুর ভরাটের প্রস্তাব পাঠাতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)—এর ৬ (ঙ) অনুযায়ী, জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ছাড়া কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধা সরকারি এমনকি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুর ভরাট না করার বিধান রয়েছে।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনজন দাশ বলেন, বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। প্রয়োজনীয় নিয়ম মেনেই তাদের এসব কাজ করা উচিত। পুকুর ভরাটের বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।