লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শাকচর এলাকায় স্বামী-স্ত্রীকে গলায় কাপড় পেছিয়ে শ^াসরোধে করা হয়েছে। নিহতরা হচ্ছে মো. সিদ্দিক উল্যাহ (৭০) ও তার স্ত্রী আতরের নেছা(৬০)। সোমবার রাত ১২টার দিকে নিজ ঘরের দরজার তালা ভেঙ্গে নিহত দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহত দম্পত্তির ঘরে কোন সন্তান নেই। শাহজাহান নামে এক পালক ছেলে রয়েছে। সম্পত্তির লোভে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে পুলিশ। এ ঘটনায় পালক ছেলে শাহজাহান ও প্রতিবেশী গিয়াস উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত শুক্রবার দুপুরে সিদ্দিক উল্যাহ ও তার স্ত্রী আতরের নেছাকে দেখতে পায় স্থানীয়রা। এরপর থেকে তাদের আর কোন খোঁজ ছিলনা। কিন্তু ঘরের দরজা বাইর থেকে লাগানো ছিল। সোমবার রাত ১২ টার দিকে পালক ছেলে শাহজাহান ঘরের দরজার সামনে গিয়ে তাদের ডাকাডাকি শুরু করে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে স্থানীয়দের খবর দেয়। এ সময় ঘরের ভিতর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে খাটের ওপর স্বামী-স্ত্রীর গলায় কাপড় পেছিয়ে থাকা অবস্থায় তাদের দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে। তবে শুক্রবার বিকেল থেকে রাতের কোন এক সময় তাদের দুইজনকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ঘরের ছাঁদের দরজা খোলা ছিল। পাশাপাশি ঘরের মূল্যবান দলিলপত্র ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায় বলে জানায় পুলিশ।
তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বৃদ্ধ দম্পত্তির ঘরে কোন সন্তান নাই। এ কারনে সম্পত্তির লোভে স্বজনরা পরিকিল্পতভাবে তাদের দুইজনকে গলায় কাপড় পেছিয়ে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে তারা। এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবী জানান এলাকাবাসী।
নিহতদের স্বজন কামাল উদ্দিন বলেন, জমি রেজিস্ট্রি করার বিষয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য সোমবার রাতে এই বাড়িতে আসি। পরে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ ডাকাডাকি করেও তাদের সাড়াশব্দ না পেয়ে স্থানীয়দের খবর দিই। পরে পুলিশ এসে দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনার জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন তিনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোসলেহ উদ্দিন জানান, এটি একটি হত্যাকান্ড। সম্পত্তির লোভে তাদের গলায় কাপড় পেছিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। নিহত দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। কারা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। তদন্ত চলছে তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :