Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

লক্ষ্মীপুরে বৃদ্ধের ঘর নির্মাণে আ.লীগ নেতার বাধা। এলাকায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ


প্রকাশের সময় : ২ years ago
লক্ষ্মীপুরে বৃদ্ধের ঘর নির্মাণে আ.লীগ নেতার বাধা। এলাকায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি ঃ লক্ষ্মীপুরে জমি সংক্রান্ত অজুহাত এনে ৭০ বছরের বৃদ্ধ নূর নবীর বসতঘর নির্মাণে বাধা ও নাটকীয় মামলা দিয়ে কাজ বন্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহ্ আলম ও তার বড়—ভাই গ্রাম—পুলিশ সদস্য বশির উল্লাহর বিরুদ্ধে। মামলার রায় বৃদ্ধের পক্ষে ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের লেখিত অনুমতি পেয়েও আওয়ামী লীগ নেতার আতঙ্কে ঘরের কাজ করতে পারছেন না বৃদ্ধ নূর নবী। অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা কুশাখালী ইউনিয়নের (৫ নম্বর ওয়ার্ড) আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্বপ্রাপ্ত।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের (৫ নম্বর ওয়ার্ড) মদনা গ্রামের বিবির বাড়িতে সরেজমিন গেলে চোখে পড়ে এমন এক করুণ দৃশ্য। বৃদ্ধ নূর নবী এক জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করেন স্ত্রী মোফাশ্বারা বেগমকে নিয়ে। তাদের সংসারের একমাত্র ছেলে মহিউদ্দিন চাকরির সুবাদে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় থাকেন। বাবা—মার কথা চিন্তা করে মহিউদ্দিন জরাজীর্ণ ঘরটির সামনে একটি নতুন ঘর করতে গেলে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা শাহ্ আলম তার দুই ভাই গ্রাম—পুলিশ বশির উল্লাহ ও স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বাধা দেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৭০ বছর ধরে নূর নবী মদনা গ্রামে বসবাস করে আসছে বাপদাদার ভিটেমাটিতে। মদনা ২৩২ নম্বর মৌজার ২৪৩ নম্বর আর.এস খতিয়ান, ৩৮১ নম্বর দাগের ১ একর ৫৩ ডিং জমি তাদের।
স¤প্রতি ওই বসত ভিটিতে মাটি ফেলে ঘর নির্মাণ করতে গেলে হঠাৎ আওয়ামী লীগ নেতা শাহ্ আলম তার ভাই গ্রাম—পুলিশ বশির উল্লাহ ও স্থানীয় মাদরাসার শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ওই ভিটেমাটিতে সম্পদ পাবে বলে বাধা দেয়। অভিযোগ রয়েছে, এ জমিকে কেন্দ্র করে ওই বৃদ্ধ, তার স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর করেছে অভিযুক্তরা।
গত মার্চ মাসের ২৩ তারিখে আওয়ামী লীগ শাহ্ আলম লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম কোর্ট) আদালতে একটি (১৪৪ ধারা) মিছ মামলা ধায়ের করেন। মামলা নম্বর—৪১২। পরবর্তী সময় আদালত দীর্ঘদিন কাগজপত্র পর্যালোচনা করে (১৪৪ ধারা) প্রত্যাহার করেন। আদালতের রায় পেয়েও ঘরের কাজ করতে পারেন না ওই বৃদ্ধ।
বৃদ্ধের ছেলে মহিউদ্দিন বলেন, ‘বাপদাদার ভিটেমাটিতে বাবা—মাকে একটি নতুন ঘরে করে দিচ্ছি। হঠাৎ শাহ্ আলম ও তার দুই ভাই তাদের সম্পদ দাবি করে ঘরের কাজ বন্ধ করে দেয়। ইউনিয়ন পরিষদ ও আদালতে মামলা করলে রায় আমাদের পক্ষে আসে। তারা যে দাগ উল্লেখ করে মিছ মামলা দায়ের করে, ওই দাগ বিভিন্ন দাগ তাই আদালত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে স্থিতিশীল প্রত্যাহার করে। তবুও আমরা আওয়ামী লীগ নেতা ও গ্রাম—পুলিশের দাপটে খুব অসহায়। কাজ করতে গেলে তারা আমাদের হামলা করতে আসে। অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা শাহ্ আলম বলেন, ‘আমাদের খরিদ করা জমিতে তারা ঘর করতে গেছে, তাই বাঁধা দিলাম।’মামলার রায় বিষয় ও জমির দাগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সঠিক উত্তর না দিয়ে ভিন্ন রকম কথা বলেন এ আওয়ামী লীগ নেতা।
কুশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন মানিক জানান, বিরোধ দেখা দিলে সরেজমিন বিবির বাড়িতে পরিদর্শনে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়। এছাড়া ঘর করার জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। কারণ নূর নবীর বহু সম্পদ রয়েছে। যদি শাহ্ আলম গংরা জমি পান, অন্য স্থান দিয়ে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
দাসেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মফিজ উদ্দীন জানান, সম্পত্তি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। উভয়পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংসা জন্য বলা হয়েছে। যদি কেউ ফৌজদারি অপরাধ করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।