Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

লক্ষ্মীপুর রায়পুরে মেঘনার জোয়ারে পানি ঢুকছে গ্রামে, ভাঙছে বসতঘর-মসজিদ


প্রকাশের সময় : ২ years ago
লক্ষ্মীপুর রায়পুরে মেঘনার জোয়ারে পানি ঢুকছে গ্রামে, ভাঙছে বসতঘর-মসজিদ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার চারটি ইউপির ১৫টি গ্রামের বিভিন্ন স্থানে মেঘনা ভাঙনে প্রায় ২’শ বসতঘর, আবাদি জমি ও ৪০০ মিটার কাঁচা রাস্তা সম্পূর্ণ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ ও কয়েকটি পাকা সড়ক। রোববার (১৪ আগষ্ট) মেঘনার জোয়ারে উত্তর চরবংশি, দক্ষিন চরবংশি ও দক্ষিন চরআবাবিল ইউপির ১৫টি গ্রামের বসবাসকারি জেলে ও দিনমজুরদের বাড়ি পানিতে ডুবে গেছে।
চরবংশি গ্রামের মফিজ মিয়া বলেন, গত ১৫ বছর ধরে মেঘনার দুই পাড় ভাংছে। তাঁর তিনটি বসতঘরসহ তিন গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও আবাদি জমি নদীতে ভেঙে গেছে। পানির স্রোতে নদীর ওপরে থাকা পূর্ব প্রান্তের পাড় ধসে যাওয়ায় মসজিদটিও হুমকির মুখে আছে।
রোববার (১৪ আগষ্ট) দুপুরে উত্তর চরবংশি ইউপির চরইন্দ্ররিয়া গ্রামে মেঘনার জোয়ারের পানি গ্রামে ঢুকছে। মেঘনার রায়পুরে বেরিবাঁধের চান্দারখাল নামক-গ্রামে নদী ভাঙতে দেখা গেছে। সরেজমিন জানা যায়, নদীর ভাঙনে গ্রামের অন্তত প্রায় ১০০টি বসতঘর এবং প্রায় ৫০ একর আবাদি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে।
এলাকার কৃষক সুবিদ মাঝি ও মসজিদের ইমাম খলিলুর রহমানসহ লোকজন জানান, নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে চারটি ইউপির ৩০টি গ্রামের নি¤œা ল প্লাবিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। পুর্বেও তলিয়ে গেছে আবাদি ফসল। পানি প্রবেশ করেছে নদীর পাড়ের জনবসতিতে। মেঘনার পানি বৃদ্ধির কারণে উত্তর চরবংশি, দক্ষিন চরবংশি, উত্তর চরআবাবিল ও দক্ষিন চরআবাবিল ইউপির কয়েকটি স্থানে নদীটির পাড় ভাঙছে। ৫০ বছর ধরে নদীর দুই পাড় ভাংছে বলে জানান নদী পাড়ের মানুষেরা। পানি বাড়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে নৌকা পারাপারেও। পানিবন্দী হওয়ার আশংকায় বসতভিটা হারা প্রায় ২’শ পরিবার। ভাঙন ঠেকাতে এমুহূর্তে পানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বেশি সক্ষমতা নেই জানান কর্মকর্তারা।
মেঘনাবেষ্টিত-উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের সাজু মোল্লার ঘাটের মাঝি আবুল খান বলেন, ড্রেজারে নদীর পাঁড় বিলীন হয় খরায়, আর বর্ষায় রাস্তাঘাট, ভিটেমাটি বিলীন হয়। স্বাধীনতার এত বছর পরেও নিজেদের সহায় সম্বল হারাচ্ছি প্রতিনিয়ত।
উত্তর চরবংশী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন চেয়ারম্যান বলেন, রামগতি উপজেলা থেকে মতিরহাট পর্যন্ত মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে তীর সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও রায়পুর উপজেলা থেকে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার সীমানা পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছেনা। ফলে প্রতিদিন নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে শত শত একর জমি ও জনপথ। মানুষের নিরাপত্তা ও নদী ভাঙন রোধে সরকারি প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন সংসদ সদস্য। গত ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ভাঙনকবলিত নদীর তীর পরিদর্শন শেষে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুখ আহমেদ বলেন, মেঘনা নদীর রায়পুর অংশে ভাঙনকবলিত স্থানগুলো স্থানীয় সাংসদ মহোদয়কে নিয়ে পরিদর্শন করে বিষয়টি ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর) এমপি অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, রায়পুরের হাজিমারা থেকে চাঁদপুরের হাইমচর পর্যন্ত ভাঙন রোধে স্থানীয়দের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া আশ্বাস দেয়া হয়। জাতীয় সংসদের অধিবেশনে মেঘনার রায়পুর অংশে প্রকল্প গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও পানিসম্পদ মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ চেয়ে ডিও লেটারও দেয়া হয়েছে মন্ত্রনালয়ে।