Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

অভিযান সত্ত্বেও রায়পুরের মেঘনায় জাটকা নিধন বিক্রি চলছে


প্রকাশের সময় : ২ years ago
অভিযান সত্ত্বেও রায়পুরের মেঘনায় জাটকা নিধন বিক্রি চলছে

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর):লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে তিন ইউনিয়নের মেঘনার বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসন, নৌ পুলিশ, মৎস্য বিভাগ ও কোস্টগার্ডের উদ্যোগে জাটকা রক্ষার অভিযান চলছে। এরপরও জাটকাবিরোধী অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের ফাঁকি দিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থানীয় জেলেরা ব্যাপক হারে জাটকা নিধন ও বিক্রি করছেন। এতে প্রত্যাশা অনুযায়ী ইলিশের উৎপাদন হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ, অভিযানের খবর আগে ভাগেই ফাঁস হওয়ায় জাটকা ধরেও পার পেয়ে যাচ্ছেন জেলেরা। সচেতনতার অভাবে জেলেরা জাটকা ধরছেন, ক্রেতারাও কিনছেন। দুই ফাঁড়ির পুলিশও তাদের দাযিত্ব পালন করেনা। তাদের সামনেই জাটকা নিয়েশহরেযাচ্ছে জেলেরা।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, ইলিশ সম্পদ তথা জাটকা রক্ষায় ১ মার্চ থেকে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস মেঘনা নদীর চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে রায়পুর ও রামগতির মেঘনা নদীর পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় সব প্রকার মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। স¤প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞার ওই পরিপত্র জারি করে। মেঘনায় মাছ ধরা ছাড়াও ইলিশ বা জাটকা পরিবহন,বিক্রি ও বাজারজাতকরণও নিষিদ্ধ করা হয়।
বুধবার ভোর বেলায় (৬ এপ্রিল) সকালে মেঘনার হাজিমারা, পুরান বেরির মাথা, সাইজুদ্দিন মোল্লার ঘাট সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সেখানে জেলেরা জাল পেতে জাটকা ধরে দ্রুত ট্রলারে করে পালিয়ে যাচ্ছেন। দু—একটি এলাকায় নদীর মাঝখানে জাল পেতে রেখেছেন। জালের অবস্থান বুঝতে এসব জালের দুই প্রান্ত প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন। দূর থেকে জাল আছে কি নেই বোঝা যায় না। জালের আশপাশে কোনো জেলেও থাকেন না। ভোলা, হাইমচর ও চাঁদপুরের সীমানা থেকেও ইলিশ ধরে এনে বিক্রি করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার চরবংশির নাইয়াপারা এলাকার দুইজন জেলে বলেন, ‘হেগো (অভিযানকারী) ফাঁকি দিয়া গভীর রাইতে মেঘনায় জাল ফালাই। জাটকা ধইরা ট্রলারে কইরা পালাইয়া যাই। দিনের বেলায়ও মাঝেমধ্যে জাটকা ধরি। অভিযানকারীরা আওনের আগেই মাছ লইয়া চইলা যাই। গোপনে বিভিন্ন জায়গায় হেগুলা বিক্রি করি। প্রতি কেজি জাটকা ২০০ থেকে ২৫০ টেয়ায় বেচি। ক্রেতারাও জাটকা পাইলে লুটে নেয়।’
ওই জেলে আরও বলেন, ‘কখন অভিযান অইব সেইডা আগেই জাইনা যাই। এ লিগা জাটকা ধরতে সুবিধা অয়। সরকারের নিষেধাজ্ঞা মানলে সংসারের খরচ দিব কে? হেরা (মৎস্য বিভাগের লোকজন) মাসে ৪০ কেজি কইরা চাউল দেয়। শুধু চাউল দিয়া সংসার চলে না। অন্যান্য খরচও আছে। এ লিগা গোপনে জাটকা ধরি।’
রায়পুর এলএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, মেঘনায় যে হারে জাটকা নিধন হচ্ছে, তা বন্ধ হওয়া দরকার। না হলে ভবিষ্যতে ইলিশ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইলিশ রক্ষার কর্মসূচিও ব্যাহত হবে। জাটকা রক্ষার অভিযান আরও জোরদার হওয়া দরকার। অভিযানের খবর আগেভাগেই ফাঁস হচ্ছে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, উপজেলায় ১ মার্চ থেকে গত ১মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৮টি মোবাইলকোর্ট ও ৫৮টি অভিযানে ২.০৪ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল ও ১৭০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়েছে।প্রতিদিন অভিযাচালানো হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলার জাটকা রক্ষা—সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি অনজন দাশ বলেন, তাঁরা জাটকা রক্ষায় নজরদারি আরও বাড়াবেন। তবে জাটকা নিধন বন্ধে জেলেদের পাশাপাশি ক্রেতাদেরও সচেতন হতে হবে। সামাজিক—রাজনৈতিক নেতাদের এ বিষয়ে ভূমিকা নিতে হবে।