Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

নীলফামারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে তিন ভাই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু


প্রকাশের সময় : ২ years ago
নীলফামারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে তিন ভাই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু

নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সদর উপজেলার মনসাপাড়া এলাকায় চিলাহাটী থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী মেইল ট্রেনে কাটা পড়ে দুই বোন, এক ভাই ও এক যুবকের অকাল মৃত্যূর ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে এখন চলছে শোকের মাতম। তিন সন্তানের অকাল মৃত্যুতে বার বার মুর্ছা যাচ্ছে বাবা, মাসহ পরিবার আর নিকট স্বজনেরা। সংস্কারাধীন রেল সেতুতে দাড়িয়ে থাকা শিশুদের নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিহত হয় অপর এক যুবক প্রতিবেশী শামিম। শোকের ছায়াও নেমেছে নিহত শামিমের পরিবারেও। পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও দেখা মেলেনি রেল কর্র্তৃপক্ষের। গত বুধবার সকাল আটটার দিকে মনসাপাড়া এলাকায় রেলসেতুর পাশে একটি ট্রাক্টর থেকে ইট নামাচ্ছিলেন শ্রমিকেরা। এর পাশেই রেলসেতুর অপর প্রান্তে দাড়িয়ে একই এলাকার সাত বছরের লিমা, চার বছরের রেশমা ও আড়াই বছরের মোমিনুর ট্রাক্টর থেকে ইটনামা দেখছিল। এ সময় ইট বোঝাই ট্রাক্টরটি চালু থাকায় তার শব্দে ছুটে আসা ট্রেনের শব্দও শুনতে পায়নি তারা। এমনকি ট্রেনও কোন হর্ণ দেয়নি। এ সময় অপর প্রান্তে দাড়িয়ে থাকা শামিম তাদের বাঁচাতে ঝাপ দেয় চলতি ট্রেনের সামনে। ইতোমধ্যে ট্রেনে কাটা পড়ে লিমা ও রেশমা। নিহত তিন শিশু মনসাপাড়া এলাকার ভ্যানচালক রেজওয়ানের সন্তান। নিহত শামিম একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত মোমিনুর ও শামিমকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষনা করেন। চড়াইখোলা ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের আব্দুল মজিদ পাকু (৬০) দুই নাতনী ও এক নাতীর মৃত্যুর খবর শুনে ছুটে যায় তাদের বাড়ীতে। তাদের মৃতদেহ দেখে হারিয়ে ফেলেন সজ্ঞা। তাকে দ্রæত নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। তিনি এখন চিকিৎস্ধাীন আছেন। নিহত শামিমের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই তিন শিশুকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে আমার ছেলে ট্রেনের সামনে গিয়ে শিশু মোমিনুরকে নিয়ে ঝাপ দেয়। এ সময় দ্রত গতির ট্রেনটি তাকে ধাক্কা দিলে সে শিশুটিসহ ছিটকে পড়ে পাশের একটি গর্তে। এতে দুইজনই গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাদের বাঁচাতে দ্রত হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে ডাক্তার তাদেরকে মৃত ঘোষনা করেন। আমার ছেলে এত বড় ঝুকি নিয়ে তাদের জীবন বাঁচাতে ট্রেনের সামনে ঝাপ দেয়। তা ভাবতেই আমার শরীর সিউরে উঠছে। ভ্যানচালক রেজওয়ান কথা বলতে বলতে বার বার মুর্ছা যাচ্চিলেন। মাঝে মধ্যে বুক চাপড়ে বিলাপ করছিলেন। তিন সন্তানকে হারিয়ে পাগল প্রায় অবস্থা। বুক চাপড়ে বলছিলেন আল্লাহ তুই আমাকে নিয়ে গিয়ে গেলিনা কেন? এখন আমি কী নিয়ে বাঁচবো। আমার তো আর কেউ বাবা বলে ডাকবে না। নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান বলেন, একই পরিবারের তিন শিশু ও এক যুবকের অকাল মৃত্যু মর্মান্তিক। তাদের বাঁচাতে যুবক শামিম যে সাহসিকতা দেখিয়েছেন তা জেনে আমি অভিভুত। ওই পরিবারের সদস্যদের বিয়োগে রইল আমার সমবেদনা। স্থানীয়দের লাইন পারাপারে রেল কর্তৃপক্ষকে আমি রেল ক্রসিং স্থাপনের দাবী জানাবো।