Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

পণ্যসহ দোকান পেয়ে মহা খুশি ভিক্ষুক গিয়াস উদ্দিন


প্রকাশের সময় : ৩ সপ্তাহ আগে
পণ্যসহ দোকান পেয়ে মহা খুশি ভিক্ষুক গিয়াস উদ্দিন

প্রতিনিধি :মোঃ গিয়াস উদ্দিন (৪১)। সুস্থ্যভাবেই জন্মগ্রহন করেছিলেন তিনি। গরীব পিতা-মাতা অনেক চেষ্টা ও বড় ডাক্তার দেখিও গিয়াসকে সুস্থ্য করতে পারেননি। এক পর্যায়ে গিয়াস আর সুস্থ্য না হওয়ায় আর চিকিৎসা করাননি। এভাবেই উপার্জনক্ষম পঙ্গু অসহায় গিয়াস উদ্দিন গত ৪০ বছর ধরে লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের চরআবািলের উদমারা গ্রামে বসবাস করছেন ।
সারা দিন রায়পুর শহরের ট্রাফিক মোড়ে এবং মসজিদের সামনে থেকে ভিক্ষা করে যা পান, তা দিয়েই দুই মেয়ে ও তিন ছেলেসহ স্ত্রী এবং চালাতে হয় জীবন। যেদিন ভিক্ষায় বের হতে পারেন না, সেদিন পেটে ভাত জোটে না।
সেই গিয়াস উদ্দিনকে ভিক্ষা ছেড়ে স্বনির্ভর জীবন গড়ার লক্ষ্যে প্রবীন ও প্রতিবন্ধি কল্যাণ সংস্থার পরিচালক সাইফুল ইসলাম রিংকুর উদ্যোগে মালামালসহ একটি মুদিদোকান উপহার দিয়েছে উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়। গত রোববার (৭ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা প্রশাসন চত্বরে গিয়াস উদ্দিনের হাতে দোকান হস্তান্তর করেন সমাজসেবা কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম। উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর এই কাজে ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় করেছে। দোকান পেয়ে খুশি অসহায় ও দরিদ্র গিয়াস উদ্দিন।
উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ভিক্ষুকের সংখ্যা ৩১০০ । ১৩ জন অসহায় ভিক্ষুককে পুনর্বাসিত করতে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই অর্থে দোকানঘর নির্মাণ করে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে মালামাল কিনে দেওয়া হয়েছে গিয়াস উদ্দিনকে।
রায়পুর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ২০১০ সাল থেকে প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারের ভিক্ষুক পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হয়। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ‘ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান’ শীর্ষক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশের ৫৮টি জেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসনে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত ১৩ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘মেয়েডাক ( দুই টা মেয়ে) বিয়া দিয়াছি। আমি পঙ্গু মানুষ। ঠিকমতো ভিক্ষা জুটাপার পারি না। বউ-মাইয়া,ছেলের প্যাটে ভাতও জুটাতে পারি না। দোকানডা পাইয়া খুব ভালো লাগছে। আর ভিক্ষা করমো না। ব্যবসা করেই প্যাটে ভাত দিমু।’ এখন গ্রামের মানুষ বলবেন আমি দোকানদার।
হামিদা বেগম বলেন, ‘অন্ধ স্বামী রোদত পুড়ে, বৃষ্টিত ভিজে রাস্তাত ভিক্ষা করতে কষ্ট হচ্চিল। দোকানডা পাইয়া, কষ্টের শ্যাষ হলো।’
রেববার দুপুরে রায়পুর উপজেলা প্রশাসন চত্বরে দোকান হস্তান্তর করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ ইমরান খান।
রায়পুরে প্রবীন ও প্রতিবন্ধি কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সাইফুল ইসলাম রিংকু বলেন, শহরের ট্রাফিক মোড়ে একটি ব্যাংকের নীচে গত ৩০ বছর ধরে ভিক্ষা করে আসছে। আমি তাকে ডেকে একটি হুইল চেয়ার দিয়েছি। এসময় সমাজ সেবা কর্মাকর্তা গিয়াস উদ্দিনকে ভিক্ষুক পুর্ণবাসন করে দিয়েছেন। এতে গিয়াস উদ্দিনসহ তার পরিবার খুব খুশি।
রায়পুর উপজেল নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ভিক্ষাবৃত্তিকে নিরুৎসাহিত করে ভিক্ষুকদের স্বনির্ভর করতেই পুনর্বাসনের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে রায়পুর ভিক্ষুকমুক্ত করার সরকারের মহৎ উদ্যোগ সফল হবে।