Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

রায়পুরে অস্বাভাবিক লোডশেডিং, জনমনে চরম ক্ষোভ


প্রকাশের সময় : ১ বছর আগে
রায়পুরে অস্বাভাবিক লোডশেডিং, জনমনে চরম ক্ষোভ

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর):লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে গত তিনদিন ধরে (২০ ঘন্টাই বিদ্যুৎ থাকছে না) বিদ্যুতের অস্বাভাবিক লোডশেডিং চলছে। বিদ্যুৎ গেলে যেন আর ফেরার খবর থাকে না। এতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লোকসানের পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। দিনরাত সমানতালে লোডশেডিং বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে বাড়ছে চরম ক্ষোভ— ও অসন্তোষ। এদিকে দেশের সর্বচ্চ তাপদাহে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে রায়পুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে গ্রাহকরা মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৯ অক্টোবর বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষুব্ধ লোকজন রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনে সাতটি গাড়িতে আগুন দেয়। এতে কয়েক লাখ টাকার বৈদ্যুতিক মালামালও পুড়ে যায়। এ সময় লক্ষ্মীপুর—রায়পুর আ লিক মহাসড়ক, বাসাবাড়ি এবং রাখালিয়া এলাকায় গাছের গুঁড়ি, ইট ফেলে এবং টায়ার জ্বালিয়ে কয়েক ঘণ্টা অবরোধ করে এলকাবাসী।
জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে প্রায় তিন লাখ। পিক আওয়ারে প্রায় ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে ২৩ থেকে ২৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে শুধু রায়পুর উপজেলায় প্রায় এক লক্ষ্য দশ হাজার গ্রাহক আছে।তাদের চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
কিন্তু পানপাড়া ও রায়পুরের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে (সাব স্টেশন) বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ছয় মেগাওয়াট। এ দুই উপকেন্দ্র থেকে সাতটি ফিডারে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এতে করে হাসপাতাল ও এশিয়া মহাদেশের মৎস প্রজনন ও প্রশিক্ষন কেন্দ্রে রেনুপোনা উৎপাদন ব্যাহতসহ কল—কারখানা, ব্যবসা—বাণিজ্য, ব্যাংক—বিমা ও অফিসপাড়াসহ সর্বত্র স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।স্থানীয় গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যুৎ সরবরাহে কর্তৃপক্ষ সুষম বন্টন না করে বৈষম্য করছেন। এ জন্য জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে রামগঞ্জ, রায়পুর এবং চন্দ্রগঞ্জে। এক ঘণ্টা পরপর দুই ঘণ্টা লোডশেডিং। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত এটা এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনেও লোডশেডিং থেকে রেহাই নেই।
রায়পুর সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র কাউসার হোসেন বলেন, গ্রামে বিদ্যুতের লোডশেডিং ভয়াবহ। একবার বিদ্যুৎ গেলে আসার খবরই নাই। এতে পড়ালেখার পাশাপাশি মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সংবাদকর্মী মাজেদ হোসেন বলেন, আধাঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলেও আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা লোডশেডিং দেয়া হয়। এতে বিভিন্ন ব্যবসা—বাণিজ্যে ধস নেমে আসছে। এ অবস্থার উত্তরণ না হলে গ্রাহকরা বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নামবে।
রায়পুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদ বলেন, বিদ্যুতের অস্বাভাবিক আসা—যাওয়ার কারণে মানুষের ঘুমও হারাম হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা ও উপজেলা মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থাপন হলেও সুফল মিলছে না।
রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাহাদাত হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন দেশে তীব্র তাপদাহে চাহিদা বেড়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম হওয়ায় দুপুরে, সন্ধ্যায় ও রাতে লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন কামাল বলেন, চাঁদপুর কেন্দ্রে গ্যাস সংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ থাকায় এ সংকট হয়। এছাড়া নোয়াখালীর চৌমুহনী—লক্ষ্মীপুর আ লিক গ্রিডের কেবি স ালন লাইনে উন্নয়ন কাজ চলছে। শিগগির সংকট কেটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।