Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

রায়পুরের গ্রামীন-কাঁচা রাস্তাগুলো চলাচলে গ্রামবাসীদের চরম দুর্ভোগ


প্রকাশের সময় : ২ years ago
রায়পুরের গ্রামীন-কাঁচা রাস্তাগুলো চলাচলে গ্রামবাসীদের চরম দুর্ভোগ
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ৫১২টি গ্রামীন কাঁচা রাস্তা চলাচলে গ্রামবাসীরা চরম দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে থাকে। তখন যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটেও চলাচল কষ্টকর। তবে গ্রামবাসীরা বলছেন, কাঁচা রাস্তা ও ইটের সলিংয়ের রাস্তাগুলো পাকা করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি করছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাঁদের দাবি ও প্রত্যাশা—সম্প্রতি ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী জনপ্রতিনিধিরা-দ্রুত রাস্তাগুলো পাকা করে দুর্ভোগ লাগব করবেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা উপকুলীয় অঞ্চলের উত্তর চরবংশী, দক্ষিন চরবংশী, চরমোহনা, উত্তর চরআবাবিল, দক্ষিন চরআবাবিল ও বামনী ইউপি সহ ১০ ইউপির ৫১২টি কাঁচা রাস্তা বেহাল। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে গর্ত। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে থাকে। ঝুঁকি নিয়ে এসব রাস্তা দিয়ে স্থানীয় জনসাধারণ চলাচল করছেন। শুধু তা-ই নয়, ওই এলাকার প্রাথমিক স্কুল-ও কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরাও এ রাস্তাগুলোর ওপর নির্ভরশীল। এলাকার কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে এ রাস্তাগুলো ব্যবহার করে থাকেন। অসুস্থ রোগীদের এইসব রাস্তা দিয়ে চিকিৎসার্থে হাসপাতালে নেওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ।
উত্তর চরবংশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মনির হোসেন মোল্লা বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই ইউনিয়নের কাঁচা-রাস্তাগুলোতে পানি জমে কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চলাচলরত সাধারণ মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রতিনিয়ত ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনজন গ্রামবাসী বলেন, ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা এলাকার দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে রাস্তাগুলো পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। কিন্তু কখনোই তা আর বাস্তবায়ন হয়না। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী কাঁচা রাস্তা পাকা করার জন্য বিভিন্ন মহলের কাছে আবেদন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দক্ষিন-চরআবাবিল ইউপির গাইয়ারচর গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘কাঁচা রাস্তায় চলাচল করতে প্রতিদিন আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। রাস্তা দ্রুত পাকা করা হোক। এ জন্য আমরা লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নে হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
উত্তর চরআবাবিল ইউপির হায়দরগঞ্জের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক মানষ ঘোষ  যুগান্তরকে বলেন, ‘মেঘনা উপকূলীয় এ অঞ্চলের প্রায় রাস্তা বেহাল। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হয় রোগীদের। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের। জরুরি মুহূর্তে অ্যাম্বুলেন্স বা কোনো সিএনজি অটোরিকশায় তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। এ রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্স বা অটোরিকশা ঢোকানো যায় না। রোগী নিয়ে খুবই ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্বজনদের।’ একই বক্তব্য দেন উত্তর চরবংশি গ্রামের সৈয়দ মাঝি ও হাসেম মা তফাদা।
দক্ষিন চরবংশী ইউপির নবনির্বাচিত সদস্য দিদার মোল্লা  বলেন, ‘এলাকার কাঁচা রাস্তাগুলো চলাচল উপযোগী করতে আমি আপ্রান চেষ্টা করবো। ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু ফরাজি নিজের আখের গোছানি ছাড়া কোন কাজই করেনি।। তাই সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে যায়। রাস্তা পাকা হলে চলাচলে সুবিধা হবে।’
উত্তর চরআবাবিল ইউপি চেয়ারম্যান জাফর উল্লাজ দুলাল হাওলাদার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের প্রায় সড়ক কাচাঁ রয়েছে। পাকাকরণের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হবে। আশা করি দ্রুতই কাঁচা রাস্তাগুলো পাকা করা হবে।
রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ  বলেন, ৬৯৬টি রাস্তা বা সড়ক রয়েছে। তার মধ্যে ৯৭টি পাকা, ৮৭ টি আধা পাকা, ৫১২টি কাঁচা, ও ১৩টি রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে।  ইতিমধ্যে কাঁচা রাস্তাগুলো মাপজোখ করে বাজেট তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে রাস্তাগুলো পাকা করা হবে বলে জানান তিনি।
রায়পুরের সাংসদ এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন  বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ করতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করি, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করে শিগগির কাঁচা রাস্তাগুলো পাকা করার ব্যবস্থা নেয় হবে।।