Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে চর কলাকোপা আশ্রয়ন প্রকল্প স্থায়ী ঠিকানায় ১৪২ ভূমিহীন পরিবার


প্রকাশের সময় : ২ years ago
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে চর কলাকোপা আশ্রয়ন প্রকল্প স্থায়ী ঠিকানায় ১৪২ ভূমিহীন পরিবার

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: মুজিব বর্ষে ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ৩য় পর্যায় (২য় ধাপে) আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে বরাদ্ধকৃত ভূমিসহ ঘরের মালিকানা বুঝে পেয়েছেন ১৪২ ভূমিহীন পরিবার। ২১জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকালে গণভবন প্রাঙ্গন থেকে ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে এসব ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর প্রধানমন্ত্রী লক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন।

এ উপলক্ষে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসন রামগতি উপজেলার ৩নং চরপোড়াগাছা ইউনিয়নে চরকলাকোপা আশ্রয়ন প্রকল্পে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। জেলা প্রশাসক মো: আনোয়ার হোছাইন আকন্দ এর পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) এর সংসদ সদস্য মেজর (অব:) আবদুল মান্নান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো: আশরাফ উদ্দিন, পুলিশ সুপার ড. এ এইচ.এম কামরুজ্জামান,জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মিয়া মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংক, সাবেক সভাপতি এম আলাউদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোহাম্মদ নুরএ আলম।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য মো: আবদুল্যাহ (আল মামুন), উপজেলা চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরী, রামগতি পৌর মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর পৌর মেয়র মোজাম্মেলন হায়দার মাসুম ভূঁইয়া, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো: আবুল হাসনাত খান, রামগতি অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আলমগীর হোসেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল ওয়াহেদ মুরাদ, সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপকারভোগী, সংবাদকর্মী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন জেলা প্রশাসক মো: আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: একরাম হোসেন এবং উপকারভোগী নাসিমা বেগম। অপর সদর উপজেলার প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিক ভাবে ১৫০ পরিবারের ঘরের দলিলপত্র হস্তাস্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে সর্বমোট ৩৯০টি ঘর রয়েছে। ইতিপূর্বে ২৪ এপ্রিল ৫২টি ঘর উপকারভোগীদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ৯নং চরগাজী এবং ৭নং চররমিজ ইউনিয়নে অবশিষ্ট্য ১৯৬টি ঘর নির্মানাধীন রয়েছে। দু মাসের মধ্যে এর নির্মান কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরী। উক্ত প্রকল্পে প্রতিটি উপকারভোগী একটি ঘরের সাথে ২শতাংশ ভূমির মালিকানা পেয়েছেন। প্রকল্পটিতে পাকা রাস্তা, দুটি ঘাটলাসহ তিনটি পুকুর, ১৩টি গভীর নলকূপ, বিদ্যুৎ ও স্যানিটেশনসহ শিশুদের জন্য চিত্ত বিনোদনের সরঞ্জাম এবং সুশোভিত ফুলের বাগান রয়েছে।

প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৬ হাজার ২২৯ পরিবারকে ঘর উপহার দেয়া হয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাঁচটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে যুক্ত হয়ে এ ঘরগুলো হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর কলাকোপা আশ্রয়ণ প্রকল্প, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা আশ্রয়ণ প্রকল্প, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চর ভেলামারী আশ্রয়ণ প্রকল্প, প গড় সদর উপজেলার মাহান পাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার জঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প।

প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন নোয়াখালী জেলা বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শনে যান এবং ভূমিহীন-গৃহহীন, অসহায় ছিন্নমুল মানুষের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর ভূমিহীন-গৃহহীন, অসহায় ছিন্নমুল মানুষের পুনর্বাসনের মতো এ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহনের পর ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’ নামে এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার চর আবদুল্যা ইউনিয়নের চরগজারিয়ার নির্মাণ করা হয়েছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আশ্রয়ণ প্রকল্প। ২০০১ সালের ১৬ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ওই প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন।

উপজেলার বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম দ্বীপ চরগজারিয়ার প্রায় ৯৭৩ একর খাস জমির ওপর নির্মিত ওই আশ্রয়ণে ৯টি কলোনীর ৯০টি ব্যারাক হাউজে ৯০০ ছিন্নমূল ও নদীভাঙা ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছিল। মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে সেই আশ্রয়ণ প্রকল্পটি বিলীন হয়ে যায়।