Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

লক্ষ্মীপুরে রায়পুরে নীতিমালার তোয়াক্কা নেই, স্কুল,বাজার,মসজিদ,বাড়ির পাশে অবৈধ করাত কল


প্রকাশের সময় : ২ years ago
লক্ষ্মীপুরে রায়পুরে নীতিমালার তোয়াক্কা নেই, স্কুল,বাজার,মসজিদ,বাড়ির পাশে অবৈধ করাত কল

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুরে সংরক্ষিত বনভূমি ১০ কিঃ এবং স্কুল, বাজার, মসজিদ ও জনবসতি এলাকায়—বাড়ির দুইশ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ধরনের করাত কল স্থাপনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না অসাধু করাতকল মালিকরা।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে স্কুল, বাজার, বসতবাড়ি ও মসজিদ কোল ঘেঁষেই গড়ে তোলা হয়েছে করাত কল। শুধু তাই নয়, এসব করাত কলের জন্য নেওয়া হয়নি লাইসেন্স,নেই পরিবেশ অধিদফতরে ছাড়পত্রও। এসব করাত কলে কাঠ জোগান দিতে গিয়ে উজাড় হচ্ছে বন বিভাগ তথা বেড়িবাঁধ ও সড়কের পাশের গাছগুলো। তাতে পরিবেশের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। সরকারও বি ত হচ্ছে রাজস্ব থেকে।
স্থানীয়রা বলছেন, বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকি ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে রায়পুরে লাইসেন্স ও ছাড়পত্রবিহীন অবৈধ করাত কল গড়ে উঠেছে। আর বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা ‘শিগগিরই’ ব্যবস্থা নেবে।
মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় এবং দক্ষিন চরবংশী, উত্তর চরবংশী,চরমোহনা, চরআবাবিল, কেরোয়া, বামনী, চরপাতা, সোনাপুর ও রায়পুর ইউনিয়নের বেরিবাঁধ এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি করাত কল। জানাযায়, এর কোনোটিরই লাইসেন্স বা ছাড়পত্র নেই। অথচ এ সংক্রান্ত বিধিমালা অনুযায়ী করাত কল স্থাপনের জন্য প্রথমে বন বিভাগের লাইসেন্স নিতে হয়। ২০০০ টাকা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দিয় আবেদন করতে হয় লাইসেন্সের জন্য। এরপর লাইসেন্স পেলে নিতে হয় পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র।
করাত কল (লাইসেন্স) বিধিমালায় ২০১২—তে আরও বলা হয়েছে—সংরক্ষিত, রক্ষিত, অর্পিত বা অন্য যেকোনো ধরনের সরকারি বনভূমির সীমানা থেকে ন্যূনতম ১০ কিলোমিটারের মধ্যে কিংবা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্থল সীমানা থেকে ন্যূনতম ৫ কিলোমিটারের মধ্যে করাত কল স্থাপন করা যাবে না। এছাড়া সরকারি অফিস—আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিনোদন পার্ক, উদ্যান ও জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে করাত কল স্থাপন করা যাবে না। এ আইন কার্যকর হওয়ার আগে নিষিদ্ধ স্থানে করাত কল স্থাপন করা হয়ে থাকলে আইন কার্যকরের তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সেগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। তা না করা হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তা বন্ধের জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
জাতীয় এই বিধিমালার কোনো তোয়াক্কা না করেই রায়পুরে যেখানে সেখানে গড়ে উঠেছে অবৈধ করাত কল। বন বিভাগের বিধান লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাছাড়া একই বিধিমালায় অনুমোদিত স্থানে লাইসেন্স ও পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নিয়ে করাত কল স্থাপন করা হলে সেগুলোর কার্যক্রম সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এই বিধানও মানছে না কোনো করাত কল। বন ও পরিবেশ বিভাগের তদারকি ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাব এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
রায়পুর—হায়দরগঞ্জ সড়কের নর্দমা নামক স্থানে দুটি করাত কলের মালিক আবুল হোসেন মুন্সি ও ইব্রাহিম হোসেন। আবুল হোসেনের মোবাইল নম্বরে বারবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে, নুরনবি বলছেন,এলাকার জনসাধারণ উপকারের স্বার্থে করাত কল স্থাপন করেছেন। তবে এর লাইসেন্স বা পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে বন বিভাগ বলছে, এদের কোনোটিরই লাইসেন্স নেই।
রায়পুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা চন্দন ভৌমিক বলেন, ১৪টির লাইসেন্স আছে ও ২০টির লাইসেন্স নাই । ১৮টি অনুমোদনের জন্য আবেদন করা রয়েছে। এখনো আমাদের কিছু না জানিয়েই করাত কল নির্মাণ করা হচ্ছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে নানান বিধিনিষেধ ও লকডাউন চলছে। এই সুযোগে তারা মিলটি স্থাপন হচ্ছে। খেঁাজ—খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।