Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

লক্ষ্মীপুরে ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত


প্রকাশের সময় : ২ years ago
লক্ষ্মীপুরে ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ভাসছে লক্ষ্মীপুরের ১৩টি ইউনিয়ন। এতে দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক হাজার পানিবন্দী মানুষ। শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুর থেকে জোয়ার শুরু হয়। এতে রামগতি-কমলনগর উপজেলার নদীর তীর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরেও ৩ ফুট উচ্চতায় জোয়ারের স্রোত দেখা যায়।

এদিকে কমলনগর উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের লুধুয়া বাগারহাট থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে ফলকন উচ্চ বিদ্যালয়। জোয়ারের কারণে ছুটি পেয়ে কোমর পানি মাড়িয়ে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এরমধ্যে শিশু শিক্ষার্থীরা সাঁতরে বাড়ি ফিরেছে। এ অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার মাছঘাট এলেকায় জেলেরা ঘাটে ফিরেছেন। কিন্তু মাছ শিকারে ক্লান্ত শরীরে ঘাটে ফিরে তারা আরো বেশি বিপাকে পড়েছে। কূলে উঠতে হয় বুক পরিমাণ পানি অতিক্রম করে।

স্থানীয়রা জানায়, গত ৪ দিনের জোয়ারে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বিস্তির্ণ এলাকা নদী গর্বে বিলীন হয়ে গেছে। জোয়ারের তীব্র স্রোতে ও ভাটার টানে অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কগুলো দিয়ে যাতায়াতে চরম বিপর্যয়ে পড়তে হচ্ছে। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতাল নেয়ার মতো গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমলনগরের চরমার্টিন, চরকালকিনি, চরফলকন, পাটারিরহাট, সদরের চররমনী মোহন, রায়পুরে উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী ও রামগতির চরআবদুল্লাহসহ প্রায় ১৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। কমলনগরের চরফলকন উচ্চ বিদ্যালয় ও চরকালকিনির মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ জোয়ারে পানিতে কোমর পরিমাণ ডুবে গেছে। বাধ্য হয়ে ওই পানি অতিক্রম করেই বাড়িতে ফিরতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। সদর উপজেলা থেকে রামগতি উপজেলা পর্যন্ত প্রায় ৩৭ কিলোমিটার মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নেই। গেলো একনেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩১ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রায় ৩১শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। জানুয়ারিতে কাজ শুরু হলেও দৃশ্যমান নয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার কাজ রেখে পালিয়েছেন। ঠিকাদারদের সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জড়িত। শুধুমাত্র বালু সংকট দেখিয়ে তারা কাজ করছে না। তাদের কারণে প্রতিদিন কেউ না কেউ নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছেন। চাঁদপুরে বালু পাওয়া না গেলে অন্যত্র থেকে আনার ব্যবস্থাও তারা করেন না। উপকূলীয় বাসিন্দাদের দূর্ভোগে রেখে তারা বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে যাচ্ছেন।

কমলনগরের চরকালকিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান ছায়েফ উল্যা বলেন, তীব্র স্রোতে উপকূলে জোয়ারের পানি ঢুকেছে। এতে অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ভেঙে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। মানুষ খুব দূর্ভোগে রয়েছে।

রামগতি উপজেলার চর আবদুল্লাহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মঞ্জুর বলেন, আমার ইউনিয়নটি চারপাশ মেঘনা নদীতে বেষ্টিত। প্রতিটি ভিটা জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে। মানুষের দূর্ভোগের অন্ত নেই। টানা জোয়ারের অনেকে ঘরে চুলাও জ্বালাতে পারেনি।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, গত কয়েকদিন টানা জোয়ার হচ্ছে। এতে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা দূর্ভোগে রয়েছে। আমি সবসময় তাদের খোঁজ নিচ্ছি। এছাড়া বাঁধ নির্মাণ কাজটিও বন্ধ রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে মেঘনায় প্রায় ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বর্ষার মৌসুম হওয়ায় নদীতে তীব্র স্রোত রয়েছে। এতে বাঁধ নির্মাণ কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া বালু সংকটও রয়েছে।