Ad Space 100*120
Ad Space 100*120

লক্ষ্মীপুরে পার্বতীনগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান-মেম্বারের দ্বন্দ্বে বন্ধ উন্নয়ন বরাদ্দ


প্রকাশের সময় : ১ বছর আগে
লক্ষ্মীপুরে পার্বতীনগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান-মেম্বারের দ্বন্দ্বে বন্ধ উন্নয়ন বরাদ্দ

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নে সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ স্থগিত রাখা হয়েছে। পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দ্বন্দ্বের কারণে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এ সংকট না কাটলে বরাদ্দ হওয়া টাকা ও চাল সরকারি কোষাগারে ফেরত যাবে। এতে ইউনিয়নের বাসিন্দারা সুফল থেকে বঞ্চিত হবে।

এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর পার্বতীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে ১০ ইউপি সদস্য (মেম্বার) অনাস্থা দেন। জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দের কাছে লিখিতভাবে অনাস্থার চিঠি দেওয়া হয়। এতে চেয়ারম্যানের বেপরোয়া আচরণ ও ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। তখন বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমানের প্রতি অনাস্থা জানানো ইউপি সদস্যরা হলেন মাইন উদ্দিন ময়ুর, মহিন উদ্দিন ভূঁইয়া, গোলাম মাওলা, মো. ইব্রাহিম, মো. কামরুজ্জামান, ইব্রাহিম, জাবের হোসেন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য জোসনা বেগম, কল্পনা রানী নাথ ও ইসরাত জাহান।

উপজেলা পরিষদ সূত্র জানায়, পার্বতীনগর ইউনিয়নে চলতি অর্থবছরে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের ৮২ জন শ্রমিকের জন্য ১৩ লাখ ১২ হাজার টাকা, কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা, টেস্ট রিলিফের (টিআর) এক লাখ ৩০ হাজার টাকা, কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের চার টন চালসহ কয়েকটি প্রকল্পের জন্য আরো কয়েক লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। এসব প্রকল্পের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সভা করে কার্যবিবরণীসহ তালিকা জমা দিতে হয়। কিন্তু সেপ্টেম্বরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেওয়ায় পরিষদে কোনো সভা হচ্ছে না। এতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ (পিআইও) সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সভার কার্যবিবরণী জমা দেওয়া হয়নি। তবে চেয়ারম্যান শুধু নিজের সই করা তালিকা জমা দিতে এলেও তা নেওয়া হয়নি।

পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মাঈন উদ্দিন ময়ুর বলেন, ‘গত ২৬ জানুয়ারি চেয়ারম্যান শপথ নেন। এরপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সভা হয়নি। চেয়ারম্যান সঠিকভাবে বরাদ্দ বণ্টন করেন না। আমাদের নামে বিভিন্ন প্রকল্প দিয়ে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে টাকা তুলে আত্মসাৎ করে আসছিলেন তিনি। এসব অনিয়মের কারণে বাধ্য হয়েই আমরা অনাস্থা দিয়েছি। ’

পার্বতীনগর গ্রামের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, ‘পরিষদে গিয়ে পদে পদে হয়রানি হতে হয়। এখানে কেউ কাউকে মানে না, শৃঙ্খলা নেই। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের রেষারেষিতে জনগণের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুণ। এখন শুনেছি, সরকারি সব বরাদ্দও ফেরত যাচ্ছে। ’

ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘মেম্বাররা প্ররোচিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি দিয়েছেন। এ কারণে এলাকার উন্নয়নকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে এলাকার লোকজন বঞ্চিত হবেন। আমি কোনো দোষ করিনি। শুধু অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। ’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোশারেফ হোসেন বলেন, ‘পার্বতীনগরের চেয়ারম্যান নিজেই প্রকল্প ও শ্রমিকের তালিকা জমা দিয়েছেন। এতে পরিষদের সদস্যদের সই থাকার কথা। তা না থাকায় সেখানে কোনো প্রকল্পের বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তাঁদের বিরোধ না মিটলে সব বরাদ্দের টাকা ফেরত যাবে। ’

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেন বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যদের অনাস্থা দেওয়ার ঘটনায় তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়েছি। সেটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ’